স্বেচ্ছায় ফিরলে ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করবে মিয়ানমার’

FILE PHOTO: A man crosses a bamboo bridge over rice paddies in the Chakmakul camp for Rohingya refugees in southern Bangladesh, February 13, 2018. REUTERS/Andrew RC Marshall

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাত লাখ রোহিঙ্গা যদি স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরে যেতে চায় তাহলে মিয়ানমার তাদের গ্রহণ করতে রাজি বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন।

শনিবার সিঙ্গাপুরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলন শাংরি-লা সংলাপে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। ওই সম্মেলনে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, জাতিসংঘের ‘রেসপনসিবিলিট টু প্রটেক্ট’ (আরটুপি) ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে রোহিঙ্গা সঙ্কট বিবেচনা করা যাবে কিনা। এর জবাবে তিনি ওই কথা বলেন।

২০০৫ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে আরটুপি ফ্রেমওয়ার্কটি গ্রহণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে নিজ দেশের জনগণকে রক্ষা এবং এই প্রতিশ্রুতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে এক দেশ অন্য দেশকে সহযোগিতা করবে। একই সঙ্গে সম্মিলিতভাবে অন্যদেরকে এই দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত ও সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় তারা। এমন ইস্যুতে থাউং তুন বলেন, “যদি আপনারা স্বেচ্ছায় ভিত্তিতে সাত লাখ মানুষকে ফেরত পাঠাতে পারেন তাহলে আমরা তাদেরকে গ্রহণ করতে রাজি আছি।”

মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন

এ সময় তিনি জাতি নিধন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, “এটাকে কি জাতি নিধন বলা যাবে? এখন আর কোনো লড়াই চলছে না। তাই এটা কোনো যুদ্ধাপরাধ নয়। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এটাকে বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের সুস্পষ্ট প্রমাণ প্রয়োজন। এমন গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হতে হবে। এ অভিযোগকে হালকাভাবে দেখা উচিত হবে না।”

তিনি আরও বলেন, “রাখাইনের যে আখ্যান প্রকাশিত হচ্ছে তা ‘অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর’। তবে সেখানে যে মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে মিয়ানমার সেটাকে অস্বীকার করছে না। রাখাইনের ভুক্তভোগী মুসলিম জনগোষ্ঠীকে অস্বীকার করা হচ্ছে না। তবে সেখানে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী রাখাইন, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরাও নিপীড়িত হচ্ছে।”

দেশে ফিরতে চায় রোহিঙ্গারা

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ শে আগস্ট সৃষ্ট নৃশংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে কমপক্ষে সাত লাখ রোহিঙ্গা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তাদের ওপর সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধরা গণধর্ষণ, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ সহ সব রকম অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। এসব বিষয়কে প্রামাণ্য হিসেবে তুলে ধরেছে বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন। একে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ। সেখানে বলা হয় দুই বছরের মধ্যে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারটি চূড়ান্ত করবে। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘ এবং মিয়ানমারের মধ্যে বৃহস্পতিবার এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।-